জীবনের অনেক উজ্জ্বল দিনগুলো প্রায়শ সাধারণ মুহূর্তের ভেতর লুকিয়ে থাকে। ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ মৌসুম ছিল সেরকম একটা সময়। তখন আমাদের ডিপার্টমেন্টে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা ও খেলার শিডিউল সমন্বয় করে বন্ধুদের সাথে টিভি রুমে আর্জেন্টিনার খেলা দেখা ছিল বিপুল আনন্দের উৎস।
পরীক্ষা নিয়ে পড়ার টেবিলে চাপা টেনশন, সিলেবাসের শেষ মুহূর্তের রিভিশন, আর ঘড়ির কাঁটার দিকে বারবার তাকানো এই ছিল পরিস্থিতি। খেলা দেখতে যাওয়া লাগবে যে! হলে আমরা ম্যাচের শিডিউল আর এক্সাম রুটিন মিলিয়ে হিসেব করতাম কখন পড়া শেষ করে খেলা দেখতে যাব।
প্রথম ম্যাচটি আমাদের জন্য ছিল গভীর হতাশার। সৌদি আরবের কাছে হারের পর মন ভেঙে গিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু আর্জেন্টিনার প্রতি ভালোবাসা আমাদের খেলা দেখা থামাতে পারেনি। পরীক্ষার পড়া শেষে ক্লান্ত শরীরে মাঝরাতে জার্সি পরে টিভি রুমে ছুটে যাওয়া এক অদ্ভুত উদ্যমের জন্ম দিত। ঘুমঘুম চোখে হাতে চা বা কফির মগ, হয়তো এক প্যাকেট চিপস নিয়ে টিভিরুমে হাজির হয়ে যেতাম।
হলের টিভি রুমে খেলা দেখার অভিজ্ঞতা আসলেই আনন্দদায়ক। আর্জেন্টিনার ম্যাচের সময় টিভি রুমটা যেন এক টুকরো স্টেডিয়ামে পরিণত হতো। মজার মজার মন্তব্য, খেলা নিয়ে আলোচনা আর উত্তেজনায় ভরা সেই মুহূর্তগুলো এখনো মনে পড়লে হাসি চলে আসে। সৌদি আরবের সাথে হারার পর শুরু হলো আর্জেন্টিনার বিজয়ের যাত্রা। আমরা প্রতিটি ম্যাচে যেন আর্জেন্টিনার একেকজন খেলোয়াড় হয়ে উঠেছিলাম। গোলের পর আমাদের চিৎকার, গর্জন, আনন্দ-উল্লাসে পুরো টিভি রুম একেবারে ভরে থাকত। রাতের নীরবতা ভেঙে গ্যালারির মতো চিৎকারে মুখরিত হয়ে উঠত হল। পরীক্ষার সময়ে খেলা দেখার রাতগুলো দারুণভাবে মানসিক চাপ কমিয়ে দিত। ম্যাচ শেষে সবাই মিলে হয় বিজয়ের উল্লাস করতাম; নয়তো দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে আড্ডায় মেতে উঠতাম।
ফাইনাল খেলার কথা ভুলতে পারি না। সেই রাতে আমাদের স্বপ্ন সরু সুতোর উপরে দুলছিল। টাইব্রেকারের উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তে আমরা সবাই টিভি রুমে দাঁড়িয়ে, হাত ধরে অপেক্ষা করছিলাম। আর্জেন্টিনার বিজয় মুহূর্ত বর্ণনা করা আমার জন্য এখনো অসম্ভব। মেসির হাতে ট্রফি উঠতেই টিভি রুমটা একটুকরো আর্জেন্টিনা হয়ে উঠেছিল।
বিশ্বকাপের সময়টা আমাদের শিখিয়েছে আনন্দ ভাগাভাগি করার মূল্য। খেলার একেকটি মুহূর্তে আমরা সবাই যেন একসঙ্গে বেঁচে ছিলাম। এই অভিজ্ঞতা আমাদের জীবনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, জীবনের ছোট্ট মুহূর্তগুলোই আসলে হতে পারে বড় সুখের উৎস। ফুটবল বিশ্বকাপের সময় বুঝেছি যে, আনন্দের জন্য খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন শুধু ভালো কিছু মুহূর্তকে আঁকড়ে ধরে উপভোগ করার মানসিকতা।
আনন্দের রঙিন রাতগুলো : ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবল
একটি ছোট্ট গ্রাম ভারতের ইউটিউব রাজধানী হয়ে উঠেছে
প্রযুক্তির উন্নয়নে গ্রাম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পড়ালেখা
শাড়ি নিয়ে শিল্পীতে-অনুরাগীতে আলাপ
ক্রিস্টোফার ম্যাকক্যান্ডলেস: নিঃশব্দে প্রকৃতির পথে
জীবন থেমে থাকে না, বরং অন্যভাবে গল্প শুরু হয়
মনে হচ্ছিল আমার কোনো অঙ্গহানি হয়ে গিয়েছে
বাবা-মায়ের সঙ্গে অনেকক্ষন কথা বললাম
কক্সবাজার ডিভাইন রোডের পউষী রেস্টুরেন্টে মোহাম্মদ ওমর ফারুক ও মহি উদ্দিন
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ ফ্রেশ লাগছিল