কক্সবাজারের ডিভাইন রোডের পউষী রেস্টুরেন্টে আলাপে বসলেন মোহাম্মদ ওমর ফারুক ও মহি উদ্দিন


  • জীবনজয়ী ডেস্ক   ঢাকা |
  • প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৫, ২৩:৫৮
কথা বলি

বৃহস্পতিবার। ২০২৪ এর নভেম্বরের ২৮ তারিখ। খোলার দিন। সবার কর্মব্যস্ততা থাকে। তবু দুজন পরস্পর অপরিচিত মানুষ সেদিন ‘জীবনজয়ী’র ‘কথা বলি’ বিভাগের অনুরোধে এসেছিলেন কক্সবাজারের ডিভাইন রোডের পউষী রেস্টুরেন্টে। একজন কক্সবাজার শহরের একটি কলেজের শিক্ষক মোহাম্মদ ওমর ফারুক (৩৫)। আরেকজন কক্সবাজার জেলার উখিয়ার ব্যবসায়ী মহি উদ্দিন (৪০)। 

দুজন একই সময়ে সেদিন উপস্থিত হয়েছিলেন বিচের খুব কাছের ছিমছাম পউষীতে। রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী হামিদ সাহেব নিজে ওনাদের অভ্যর্থনা করেন। আসলে জীবনজয়ীর সাথে আলাপের পরে এই দুইজনের আপ্যায়নের দায়িত্ব ডিভাইন রোডের পউষীই নিয়েছিল। ভাজি-ভর্তা, শুঁটকি, মাছের ঝোল, লইট্টা ফ্রাই, ডাল, সালাদ ও দৈ দিয়ে ভরপুর দুপুরের খাবার। খাবারের স্বাদে দুজনে মুগ্ধ।

মহি উদ্দিন ও ওমর ফারুক সেদিন সাজানো-গোছানো-পরিচ্ছন্ন একটি পরিবেশে আলাপে মেতেছিলেন ঘণ্টা দুয়েকের মতো। ভালো কথা, এটাই ছিল ‘কথা বলি’র প্রথম আয়োজন। আলাপের পরে দুজন জানিয়েছেন একে অপরকে কেমন দেখেছেন।  


মহি উদ্দিনের চোখে মোহাম্মদ ওমর ফারুক বিপরীত ধারণার লোককেও হ্যান্ডেল করতে সক্ষম

প্রথমে ওমর ফারুককে দেখে আপনার কী মনে হয়েছিল?

ফারুক ভাইকে দেখে আমার মনে হয়েছিল ইনি নিতান্তই ভদ্রলোক। এলিটভাব আছে বলে মনে হয়নি। 


কী দিয়ে আলাপ শুরু হয়?

সেদিন কলেজ খোলা থাকায় ওনার একটু দেরি হচ্ছিল। একপর্যায়ে ‘কথা বলি’র মডারেটর আমাকে তার নম্বরটা দেন। আমি ফোন করে পরিচয় দিই। এর আগে আমি জানতাম না কার সঙ্গে আলাপে বসব। উনিও না। কথা বলি ইচ্ছে করেই এই আকর্ষণটা ধরে রেখেছিল। পরে আমরা একইসাথে ডিভাইন রোডের পউষীতে ঢুকি। 


কোন বিষয়গুলো নিয়ে কথা বললেন আপনারা?

প্রথমে পেশা নিয়ে কথা হয়। উনি শিক্ষকতায়। আমি ব্যবসায় আছি। শুরুতে পড়াশোনার বিষয়ে একটি মিল পাই। ফারুক ভাই রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমিও রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়েছি; জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিয়ে-শাদি, পরিবার-সন্তান নিয়ে কথা হয়। ওয়াইফ কী করেন এসব আলাপ হয়। এ রকম আরো কিছু। 


সেই সাথে একটা বিষয় আলোচনায় এসেছে—তা হলো আমাদের দেখার চোখগুলো কমে যাচ্ছে। আমাদের চোখ থাকার কথা একাধিক। যেমন একজন মানুষকে সামাজিক চোখ দিয়ে আমাদের দেখার সুযোগ আছে। আবার নৈতিকতার চোখ দিয়ে দেখার সুযোগ আছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা বা চারিত্রিক দৃঢতার চোখে দেখার সুযোগ আছে। বিজনেসের চোখ দিয়ে দেখার সুযোগ আছে। কিন্তু বর্তমানে দেখার একটাই চোখ বানিয়ে ফেলেছি আমরা। সেটা হলো রাজনৈতিক সম্পর্কের চোখ। বাকি চোখগুলো অকার্যকর করে ফেলেছি। 


আলাপকালে মতের মিল বা অমিল কেমন ছিল? 

আমি একবার কিছু না ভেবেই ভিডিও করতে চাইছিলাম আমাদের আলাপের একটু অংশ। ফারুক ভাই তা চাননি। এটা এমন কিছু নয়। আমি কিছু মনে করিনি। আর ওনার ও আমার রাজনৈতিক ভাবধারায় ভিন্নতা আছে। তবে ওনার কথায় যুক্তি দেখেছি। 


কোন দিকগুলো ভালো লেগেছে? 

ওনার মধ্যে ইতিবাচক ভাবনা লক্ষ করেছি। মনে হয়েছে তিনি ভালো নেটওয়ার্ক রাখতে পারেন। দূরদর্শীও মনে হয়েছে। আরেকটি বিষয় মনে হয়েছে যে তিনি বিপরীত ধারণার লোককেও হ্যান্ডেল করতে সক্ষম। তিনি সামাজিক মানুষ, কমিউনিকেটিভ। জড়তা নেই।


ওমর ফারুকের কোনো কিছুতে কি বিব্রত হয়েছিলেন আপনি?

আমি কোনো বিষয়ে বিব্রতবোধ করিনি। তবে তিনি বিব্রত হয়েছেন কিনা বলতে পারছি না। 


পরিবার বা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে কি আলাপ হয়েছে?

পরিবার নিয়ে আগেই উল্লেখ করেছি। বন্ধুবান্ধব ইস্যুতে কথা হয়েছে। ওনার শৈশব ও কলেজ জীবনের বন্ধু নিয়ে কথা হয়েছে। আমার এলাকায় ওনার বন্ধু রয়েছে। ফারুক কখনো আমার এলাকায় আসলে পরিচয় হওয়ার সুযোগ হতে পারে।


আপনার বন্ধুদের সাথে ওনাকে কি আলাপ করাবেন?

আমার আপত্তি নেই। কারণ উনি ভদ্রলোক। 


আশাবাদ নাকি উল্টোটা বেশি দেখলেন?

আশাবাদটাই বেশি। ওনার একজন সন্তানের একটা সমস্যা আছে। কিন্তু এটা নিয়ে তিনি হতাশ নন। সমস্যাটা ফেস করছেন। 


মোবাইল নম্বর কি বিনিময় হয়েছে? 

হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর রেখেছি। 


ফেসবুকে পরস্পর যুক্ত হয়েছেন কি?

পউশীতে বসেই আমরা ফেসবুকে যুক্ত হয়েছিলাম। 


আপনাদের আবার দেখা হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি?

আবার দেখা হওয়ার মতো কিংবা যোগযোগের মতো একটি জায়গায় আমরা পৌঁছেছি। তাও নিশ্চিত করে কি বলা যায়? আরো দু-একবার কথাবার্তা হলে বুঝব। 


ওমর ফারুককে দুই/তিনটি শব্দে বর্ণনা করুন। 

মিশুক, ইতিবাচক, আশাবাদী। 


আলাপটিকে ১০ নম্বরের মধ্যে আপনি কত দেবেন? 

আমি নয় দেব। 


চাইলে আরো কিছু বলুন— 

ডিভাইন রোডের পউশীর স্বত্বাধিকারী হামিদ সাহেব নিজে এসে আমাদের আতিথেয়তা করেছেন। খাওয়ার পর বিল দিতে চাইলাম। ওয়েটার না করে দিল। ‘জীবনজয়ী’র অনুরোধে পউশী আমাদের লাঞ্চ করিয়েছে। খুব ভালো লাগল। ওয়েটারকে খুশি মনে টিপস দিলাম। 

আমি খুব ভালো মনে পউশী থেকে বের হয়ে আসি। ফারুক ভাইকে আমার গাড়ি করে ওনার কলেজে নামিয়ে দিই। 


মোহাম্মদ ওমর ফারুকের দেখায় মহি উদ্দিন ভালো শ্রোতা ও অমায়িক এক ব্যক্তি 


প্রথমে মহি উদ্দিনকে দেখে আপনার কী মনে হয়েছিল?

জনাব মহি উদ্দিনকে দেখে উন্নয়নকর্মী মনে হয়েছিল। পরে জানতে পারলাম তিনি একজন ব্যবসায়ী। 


কী দিয়ে আলাপ শুরু হয়?

ব্যক্তিগত পরিচয় ও কুশলাদি বিনিময়ের মাধ্যমে আলাপ শুরু হয়।


কোন বিষয়গুলো নিয়ে কথা বললেন আপনারা?

সাধারণ বিষয়াদি নিয়েই আলাপ শুরু। জীবনজয়ীর পক্ষ থেকে রাজনৈতিক বা কোনো বিতর্কিত ইস্যু বাদ রাখার পরামর্শ ছিল। তবে একপর্যায়ে রাজনীতির আলাপটা এসে যায়। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন নিয়ে কথা হলো। এর ফলে উখিয়া-টেকনাফের সার্বিক পরিস্থিতি ও পরিবর্তন কী হতে পারে? দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াতে পারে? এসব নিয়ে কথা হয় কিছুটা। 


আলাপকালে মতের মিল বা অমিল কেমন ছিল? 

কিছু জায়গায় চিন্তার পার্থক্য ছিল। যেমন, রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার কিছু অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে তিনি মনে করেন, আমি অবশ্য দ্বিমত পোষণ করেছি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আসলে মিল ছিল। 


কোন দিকগুলো ভালো লেগেছে? 

উনি অত্যন্ত অমায়িক মানুষ। তিনি স্পষ্টভাষী ও ভালো শ্রোতা। এছাড়া তিনি অপরজনের পছন্দকে মূল্যায়ন করতে জানেন বলে আমার মনে হয়েছে। 


মহি উদ্দিনের কোনো কিছুতে বিব্রত হয়েছিলেন?

না। তেমন কিছু ঘটেনি।


পরিবার বা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আলাপ হয়েছে?

তা হয়েছে। 


আপনার বন্ধুদের সাথে ওনাকে কি আলাপ করাবেন?

আমার একজন বন্ধুর সাথে ইতোমধ্যে মহি উদ্দিনের আলাপ ও পরিচয় করিয়েছি।


আশাবাদ নাকি উল্টোটা বেশি দেখলেন?

বেশ আশাবাদী মানুষ বলে মনে হয়েছে আমার কাছে। 


মোবাইল নম্বর কি বিনিময় হয়েছে?

হয়েছে।


ফেসবুকে পরস্পর যুক্ত হয়েছেন কি?

হয়েছি।


আপনাদের আবার দেখা হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি?

অবশ্যই আছে। 


মহি উদ্দিনকে দুই/তিনটি শব্দে বর্ণনা করুন। 

অমায়িক, স্পষ্টভাষী ও অতিথিপরায়ণ 


আলাপটিকে ১০ নম্বরের মধ্যে আপনি কত দেবেন? 

সলিড আট। 


চাইলে আরো কিছু বলুন—  

নতুন পরিচিতিকে কীভাবে ইতিবাচক জায়গা থেকে নিরীক্ষণ করা যায় তা বুঝতে পেরেছি ‘জীবনজয়ী’র ‘কথা বলি’ আয়োজন থেকে।



ক্যাটাগরি: কথা বলি

         

  রেটিং: ০

এই বিভাগের আরও পোস্ট

রসিঘর

রাঁধবি তুই! কিন্তু ফেসবুকে ফটো দিয়ে আমরা ক্রেডিট নেব

  • মোঃ ইমরুল ইউসুফ|
  •  ২৩-০৬-২০২৫
ক্যাটাগরি: রসিঘর

ক্যাম্পাস

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে যা পেয়েছি তা কোনোদিন ভুলব না

  • সজীব কুমার মন্ডল |
  •  ২৩-০৬-২০২৫
ক্যাটাগরি: ক্যাম্পাস

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

কীভাবে একটি ছোট্ট গ্রাম ভারতের একটি ইউটিউব রাজধানী হয়ে উঠেছে?

  • খাদিজা আক্তার |
  •  ২৩-০৬-২০২৫
ক্যাটাগরি: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

মানবিক রোবট : এক নতুন যুগের সূচনা

  • বর্ষা রানী দে|
  •  ২৩-০৬-২০২৫
ক্যাটাগরি: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

হেলথকেয়ারে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স : ভবিষ্যতের আশার আলো

  • অর্ণব মিত্র উৎসব|
  •  ২৩-০৬-২০২৫
ক্যাটাগরি: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

সর্বশেষ

সবচেয়ে পঠিত

মনে হচ্ছিল আমার কোনো অঙ্গহানি হয়ে গিয়েছে

মনে হচ্ছিল আমার কোনো অঙ্গহানি হয়ে গিয়েছে

  • সুরাইয়া সারমিন , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
নাই নেট

বাবা-মায়ের সঙ্গে অনেকক্ষন কথা বললাম

বাবা-মায়ের সঙ্গে অনেকক্ষন কথা বললাম

  • উসরাত জাহান নিতু , বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
নাই নেট

সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ ফ্রেশ লাগছিল

সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ ফ্রেশ লাগছিল

  • ইমরান চৌধুরী , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
নাই নেট

দিনটায় আমি নিজেকে সময় দিতে পেরেছি

দিনটায় আমি নিজেকে সময় দিতে পেরেছি

  • আশা আক্তার জুঁই , রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
নাই নেট

আজকের জরিপ 01

আপনি কোন সাহিত্যিকের কবিতা বা রচনা রোমান্টিক আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত মনে করেন?