একটি ছোট গ্রাম তুলসী. এটি ভারতের ছত্রিশগড়ে অবস্থিত। এই গ্রামটি বলতে গেলে হয়ে উঠেছে ভারতের ইউটিউব রাজধানী । চলতি বছরের মার্চে বিবিসির একটি প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, জয় ভার্মা নামক একজন ৩২ বছর বয়সী ভদ্রলোক গ্রামীণ মহিলাদের নিয়ে ভিডিও করে নতুন ব্লগ তৈরি করছেন। এক বৃদ্ধ মহিলা শাড়ি পরে চেয়ারে বসে আছেন, অন্য একজন মহিলা তাকে পানির গ্লাস এগিয়ে দিচ্ছেন। এরকম ভিডিও তৈরি করতে মহিলারাও বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন, গ্রামীণ এসব কনটেন্ট দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে।
একটু দূরে, অন্য এক দল ইউটিবার তাদের নিজস্ব ভিডিও বানাচ্ছেন। একজন ২৬ বছর বয়সী যুবককে চলন্ত বাসের পিছন দৌড়ে প্রচলিত মুভির হিরোর মতো অভিনয় করে ভিডিও তৈরি করতে দেখা যায়। কেউ কেউ ভিডিও এডিট করছে, কেউ ক্যামেরা ধরে কাট-অ্যাকশন বলছে। এভাবেই অন্যান্য গ্রামের মতো একটি সাধারণ গ্রাম তুলসী, যেখানে শহরের মতো উঁচু উঁচু দালান নেই, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই, সেখানেই গড়ে উঠেছে এই স্বতন্ত্র ইউটিউব ভিলেজ। কিভাব সম্ভব হয়েছে এটা?
প্রায় ৪০০০ মানুষ বসবাস করে তুলসীতে। হিসাব অনুযায়ী এক হাজারের অধিক লোক ইউটিউবে সরাসরি কাজ করছেন। পুরো গ্রাম ঘুরলে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে যিনি ইউটিউবের সাথে কোনো রকমভাবে যুক্ত নয়। শুরুর দিকে অল্প কিছু লোক ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করতেন, বাকিরা যেমন মহিলা, শিশু ও অন্য লোকজন তাদের ভিডিও তৈরিতে সহযোগিতা করত। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যে প্রায় সকলেরই নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। এতে করে গ্রামীণ উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের দিকটি অধিকতর স্পষ্ট হচ্ছে।
ইউটিউব তুলসীর চিন্তা-চেতনা ও সংস্কৃতি পরিবর্তন করে দিয়েছে। নীতারাম ইয়াদেভ নামক একজন কৃষকের মতে, ইউটিউবে ভিডিও তৈরি নিয়ে ব্যস্ত থাকার ফলে বাচ্চারা মাদক ও পাচারসহ আরো খারাপ খারাপ অপরাধ থেকে বিরত থাকছে। এতে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিপ্লব
সালটি ছিল ২০১৮, যখন ভার্মা ও তার বন্ধু জ্ঞানেন্দ্র শুক্লা অলস সময় কাটাচ্ছিলেন। তারা নিজেদের প্রাত্যহিক জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তারা চাচ্ছিল নতুন কিছু করতে যাতে সৃজনশীলতা থাকবে। তারা ‘Being Chhattisgarhiya’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। তাদের তৃতীয় ভিডিও ছিল একটি ইয়াং কাপল নিয়ে যারা ভ্যালেন্টাইন্সডেতে হিন্দু উগ্রবাদীদের দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছিল। এই ভিডিওটি ইউটিউবে ব্যাপক সাড়া পেয়েছিল। এটাই ছিল তাদের প্রথম ভাইরাল ভিডিও। যদিও এই ভিডিওটি হাস্যরসাত্মক ছিল কিন্তু সমাজের প্রতি এটা ছিল একটা মেসেজ। এর ফলে এক মাসের মধ্যে প্রায় হাজার-হাজার ফলোয়ার, সোয়া লক্ষ সাবস্ক্রাইবার তৈরি হয়। ২৬০ মিলিয়নের বেশি ভিউ পেয়েছিল ভিডিওটি।
এই সাফল্যের বরাতে ভার্মা ও শুক্লা তাদের পরিবারসহ আরো মনোযোগ সহকারে চ্যানেলটি নিয়ে কাজ করা শুরু করেন। দুই বন্ধু চাকুরী ছেড়ে দিয়ে চ্যানেলটিতে পুরো সময় বিনিয়োগ করেন।
এই জুটির সফলতায় তুলশী গ্রামের লোকজন অনুপ্রাণিত হয়। অনেকেই ইউটিউব চ্যানেল খুলতে থাকেন। ২০২৩ সালে সরকারের পক্ষ থেকে তুলসীতে একটি উন্নতমানের স্টুডিও বানিয়ে দেয়া হয়। এরপর থেকে অনুমেয়ভাবে তুলসীর ইউটিউবারদের কাজের পরিধি আরও বেড়ে যায়।
আনন্দের রঙিন রাতগুলো : ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবল
একটি ছোট্ট গ্রাম ভারতের ইউটিউব রাজধানী হয়ে উঠেছে
প্রযুক্তির উন্নয়নে গ্রাম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পড়ালেখা
শাড়ি নিয়ে শিল্পীতে-অনুরাগীতে আলাপ
ক্রিস্টোফার ম্যাকক্যান্ডলেস: নিঃশব্দে প্রকৃতির পথে
জীবন থেমে থাকে না, বরং অন্যভাবে গল্প শুরু হয়
মনে হচ্ছিল আমার কোনো অঙ্গহানি হয়ে গিয়েছে
বাবা-মায়ের সঙ্গে অনেকক্ষন কথা বললাম
কক্সবাজার ডিভাইন রোডের পউষী রেস্টুরেন্টে মোহাম্মদ ওমর ফারুক ও মহি উদ্দিন
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ ফ্রেশ লাগছিল