ক্লাস, পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশনের ফাঁকে ফাঁকে স্মৃতি তৈরি হতে থাকে নিজের অজান্তে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট্ট আঙিনার প্রতিটি জায়গাজুড়ে মিশে আছে আমাদের আড্ডা, গল্প, স্মৃতি। বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিবাহিত সময়টাতে হাজারো রঙিন স্বপ্ন মনে আসে। নতুন পরিবেশ, নতুন বন্ধু, ভিন্ন মাত্রার স্বাধীনতা। স্কুল-কলেজের বাঁধাধরা এক নিয়ম ছিল। ভার্সিটি সেই নিয়মের বেড়াজালকে ছিন্ন করে নতুন মাত্রা যোগ করে। কখনো উড়ুউড়ু মন পাখনা মেলে, কখনো সে স্বপ্ন বোনে, কখনো কল্পনার মায়াজালে আবদ্ধ হয়ে ঘুরপাক খায়।
কোনো কারণে ক্লাস বাদ হলো তো “চল বন্ধু, ঘুরতে যাই”। কখনো দল বেঁধে বুড়িগঙ্গার পাড়ে গিয়ে বসে থাকি, নদীর বুকে নৌকায় চড়ে বসি। গলা ছেড়ে নদীর স্রোতের তালে তাল মিলিয়ে গান গাই। নদীর পাড়ের ব্যস্ত লোকজন এই প্রাণোচ্ছল দলকে দেখে কিছুক্ষণ ব্যস্ততা ভুলে হয়তো উপভোগ করে সেই সুর।
টানা লেকচারে যখন মন-মস্তিষ্ক ঝিমিয়ে পড়ে তখন হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিউটি বোর্ডিংয়ে বসে থাকি দলবেঁধে। পুরান ঢাকার কোলাহলের মাঝেও শান্ত, ঠান্ডা, ছিমছাম পুরনো এই ঐতিহ্যে বন্ধুরা আড্ডা, গল্পচারিতায় মুখর করে তুলি। বিউটি বোর্ডিংয়ের ছাউনির নিচে বসে জমে ওঠে গল্প, কবিতা, আড্ডা, গান। আড্ডায় কখনো থাকে নতুন অভিজ্ঞতার কথা, ক্লাসের লেকচার কখনো বা আশেপাশের প্রেম-ভালোবাসা-বিরহ গাথা বা রাজনৈতিক আলাপ। বন্ধুদের মাঝে হাস্যকৌতুকও বাদ পড়ে না। বিউটি বোর্ডিংয়ে সময় কাটানোর আরেকটা বিশেষত্ব মূলত এখানকার চা। একে তো সুন্দর পরিবেশ, তার উপর ভিন্ন মাত্রার চায়ের স্বাদ! আমাদের আড্ডা পূর্ণতা পায় দ্বিগুণ। এখানে বসে সবাই মিলে চলে গান গাওয়া।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা ক্লাস শেষে মাঝেমধ্যে দলবেঁধে চলে যাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অথবা রমনায়। কখনোবা বুয়েট ক্যাম্পাসে। বন্ধুদের ভিড়ে নিজেকে সব থেকে সুখী মানুষ মনে হয়। সবার ভিড়ে ভুলে যাই যত অবসাদ। কখনো বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে বাড়ি ফিরি। কখনো ক্লাস শেষে বন্ধুরা মিলে দৌড়ে বাস ধরা, ভার্সিটি বাসে গলা ছেড়ে দরজায় দাঁড়িয়ে গান গাওয়া আবার কখনোবা ক্লান্ত হয়ে বাসের সিটে গা এলিয়ে দেওয়া। সবকিছুর মাঝেই একটা ভালোলাগা অনুভব করি।
বন্ধুরা আমার জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। মন ভালো নেই তো কী হয়েছে, বন্ধুরা আছে। ঘরের মধ্যে বসে থেকে ফোন চালানো ছাড়া সময় কাটছে না, বন্ধুরা আছে এখানেও। ভার্সিটি বন্ধ তাতে কী, বন্ধুরা মিলে ঘুরে আসি বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে। বিতর্ক, খেলাধুলায় অংশগ্রহণে ওদের প্রেরণায় সাহস মেলে। সবাই মিলে খুনসুটি, দুষ্টুমি, হাস্যরস বিষণ্ণতা থেকে মুক্তির মহৌষধ।
বন্ধুরা একসাথে মিলে মাঝেমধ্যে ছোট্ট বয়সে হারিয়ে যাই। “দুঃখটাকে দিলাম ছুটি, আসবে না ফিরে”, ‘দারুচিনি দ্বীপ’ চলচ্চিত্রের এই গানের সাথে সখ্য রেখে আমাদের মুহূর্তগুলো গড়ে ওঠে। উড়নচণ্ডী স্বভাবটা এদের ঘিরেই প্রকাশ পায়। একসাথে ঘুরি, লাফাই, গাই, নাচি।
এভাবে গল্প, আড্ডা, গানে বন্ধুত্ব বেঁচে থাকে আমাদের স্মৃতিতে। জীবনের ছন্দরা খুঁজে পায় সুর। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতার লাইনগুলো মনে পড়ে—
“শুনলে কথা কান জ্বলে যায়
হাসলে পেটের খিল খুলে যায়
থাকলে এরা মন ভরে যায়
আমার কিছু বন্ধু আছে।”
হ্যাঁ, আমার কিছু বন্ধু আছে। চায়ের কাপে আড্ডায় ব্যস্ত জীবন আনন্দ ও চঞ্চলতা খুঁজে পায়। ক্যাম্পাসে একটা বছর কেটে গেছে।জমেছে শত শত স্মৃতি।হাজারো স্মৃতি জমা বাকি পড়ে আছে। অনাগত সময়টাকে বন্ধুত্বের রাখি পরিয়ে পাড়ি দিতে চাই। জীবনের একটা পর্যায়ে গিয়ে যখন ক্যাম্পাস স্মৃতিরা নাড়া দেবে তখন হয়তো গেয়ে উঠব :
“আয় আর একটিবার আয় রে সখা,
প্রাণের মাঝে আয়
মোরা সুখের দুখের কথা কব,
প্রাণ জুড়াবে তায়।”
আনন্দের রঙিন রাতগুলো : ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবল
একটি ছোট্ট গ্রাম ভারতের ইউটিউব রাজধানী হয়ে উঠেছে
প্রযুক্তির উন্নয়নে গ্রাম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পড়ালেখা
শাড়ি নিয়ে শিল্পীতে-অনুরাগীতে আলাপ
ক্রিস্টোফার ম্যাকক্যান্ডলেস: নিঃশব্দে প্রকৃতির পথে
জীবন থেমে থাকে না, বরং অন্যভাবে গল্প শুরু হয়
মনে হচ্ছিল আমার কোনো অঙ্গহানি হয়ে গিয়েছে
বাবা-মায়ের সঙ্গে অনেকক্ষন কথা বললাম
কক্সবাজার ডিভাইন রোডের পউষী রেস্টুরেন্টে মোহাম্মদ ওমর ফারুক ও মহি উদ্দিন
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ ফ্রেশ লাগছিল