সুলভ মূল্যে ওষুধের অধিকার আন্দোলনের মাধ্যমে এমন একটি বিশ্ব গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখা হয়, যেখানে কেউ আর্থিক সংকটের কারণে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবে না।
সুলভে ওষুধের অধিকার আন্দোলন একটি বৈশ্বিক প্রচেষ্টা, যা সকল মানুষের জন্য জীবনরক্ষাকারী ওষুধ সহজলভ্য ও সুলভ মূল্যে সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করে। এটি মূলত স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্ঠা এবং স্বাস্থ্যকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরিচালিত হয়। বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল এবং স্বল্প আয়ের দেশে জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম এত বেশি যে তা সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে থেকে যায়। পেটেন্ট এবং মেধাস্বত্ব আইনের জটিলতা, ঔষধ শিল্পে মুনাফার উপর অতি-নির্ভরতা এবং সুশাসনের অভাব এসব সমস্যার মূল কারণ। এই সমস্যাগুলো মোকাবিলা করার জন্য সুলভে ওষুধ পাওয়ার অধিকার আন্দোলন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।
নানা কারণে ওষুধের দাম ক্রয়সীমার বাইরে চলে যায়। সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য দামি দামি যন্ত্রপাতি দরকার পড়ে। অপ্রচলিত রোগগুলোর ওষুধ সংরক্ষণের জন্য উন্নতমানের সংরক্ষণাগার দরকার হয়। যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময়ে সঠিক ওষুধ সঠিক জায়গায় পৌঁছে দেওয়াটা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে ওষুধের প্রাপ্যতা কমে যায়। এই সবগুলো দিক বিবেচনায় কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান সুলভ মূল্যে সহজে ওষুধ প্রাপ্তির অধিকার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
Médecins Sans Frontières (MSF), বা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস, একটি আন্তর্জাতিক চিকিৎসাবিষয়ক মানবিক সংস্থা। তারা সংঘাত, মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা স্বাস্থ্যসেবার অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করে। MSF-এর লক্ষ্য হলো জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসাসেবা প্রদান এবং ওষুধের প্রাপ্যতা সবার জন্য নিশ্চিত করা। সংস্থাটি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কাজ করার সময় লক্ষ করে যে, অনেক ক্ষেত্রে উচ্চমূল্যের কারণে মানুষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছে না। তাই MSF সুলভে ওষুধ সরবরাহের জন্য নীতি প্রণয়ন ও গবেষণার মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। এই কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসকে ১৯৯৯ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কর দেওয়া হয়। এই পুরস্কার তাদের অসাধারণ মানবিক কাজের তুলনায় হয়তো একটি বিশেষ অনুপ্রেরণা ছাড়া আর কিছু নয়।
Health Action International (HAI) একটি বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক, যা সুলভ, নিরাপদ এবং কার্যকর ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে কাজ করে। HAI বিশ্বাস করে, ওষুধ কোনো বিলাসপণ্য নয়; এটি মৌলিক মানবাধিকার। সংস্থাটি সরকারের নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে গবেষণা এবং পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করে। পাশাপাশি তারা সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রয়াস চালায়।
Knowledge Ecology International (KEI) একটি অলাভজনক সংস্থা, যা জ্ঞান, প্রযুক্তি এবং মেধাস্বত্ব ব্যবস্থার ন্যায্যতা নিয়ে কাজ করে। KEI ওষুধের পেটেন্ট এবং মেধাস্বত্ব ব্যবস্থার সমালোচনা করে, যা প্রয়োজনীয় ওষুধের মূল্যসীমা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করে। সংস্থাটি উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার জন্য একটি ন্যায্য এবং উন্মুক্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলার পক্ষে কাজ করে, যেখানে জীবনরক্ষাকারী ওষুধের প্রাপ্যতা সবার জন্য নিশ্চিত হয়।
এই সংগঠনগুলো একসাথে কাজ করে সুলভে ওষুধের অধিকার আন্দোলনকে এগিয়ে নিচ্ছে। তাদের প্রচেষ্টার ফলে অনেক উন্নয়নশীল দেশে জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম কমেছে এবং প্রাপ্যতা বেড়েছে। তারা নীতি নির্ধারণে প্রভাব বিস্তার, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং গবেষণার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবায় সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে।
ওষুধ প্রস্তুতকারকরা মেধাস্বত্ব আইনের মাধ্যমে নতুন ওষুধের উৎপাদন ও বাণিজ্যিকীকরণের ওপর একচেটিয়া অধিকার পায়। এটি প্রয়োজনীয় ওষুধের মূল্য কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে। বড় ওষুধ কোম্পানিগুলো অনেক সময় মুনাফার জন্য জীবনরক্ষাকারী ওষুধের উৎপাদন সীমিত রাখে। স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে সুলভ ওষুধের জন্য কার্যকর নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের অভাব রয়েছে। কম প্রচলিত রোগ এবং দরিদ্র অঞ্চলের মানুষের জন্য ওষুধ উদ্ভাবনে পর্যাপ্ত গবেষণা ও উন্নয়ন হয় না।
MSF, HAI এবং KEI-এর মতো সংস্থাগুলোর অবদান আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। তাদের পথ অনুসরণ করে সুলভ ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবার পক্ষে জনমত এগিয়ে নেওয়া জরুরি।
রাঁধবি তুই! কিন্তু ফেসবুকে ফটো দিয়ে আমরা ক্রেডিট নেব
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে যা পেয়েছি তা কোনোদিন ভুলব না
কীভাবে একটি ছোট্ট গ্রাম ভারতের একটি ইউটিউব রাজধানী হয়ে উঠেছে?
মানবিক রোবট : এক নতুন যুগের সূচনা
হেলথকেয়ারে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স : ভবিষ্যতের আশার আলো
জীবন থেমে থাকে না, বরং অন্যভাবে গল্প শুরু হয়
মনে হচ্ছিল আমার কোনো অঙ্গহানি হয়ে গিয়েছে
বাবা-মায়ের সঙ্গে অনেকক্ষন কথা বললাম
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ ফ্রেশ লাগছিল
দিনটায় আমি নিজেকে সময় দিতে পেরেছি
আপনি কোন সাহিত্যিকের কবিতা বা রচনা রোমান্টিক আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত মনে করেন?