জীবনজয়ীর ‘কথা বলি’ বিভাগের নিমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি বেলা এগারোটার দিকে লন্ডনে ইলফোর্ড এলাকায় আলাপে বসেছিলেন মনিকা সাহা (৪৬) ও সাইফ মিঠু (৪৪)। তারা বসার জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন বিলেতের বিখ্যাত কফিহাউস চেইন কস্তা’র একটি আউটলেট। কস্তার দুরন্ত স্বাদের কফিতে চুমুক দিতে দিতে এই দুজন কী আলাপ করেছিলেন তা পড়া যাক।
মিঠুর সঙ্গে সামাজিক ও পারিবারিক বিষয়ে কথা হয় মনিকার
প্রথমে সাইফ মিঠুকে দেখে আপনার কী মনে হয়েছিল?
ভদ্র ও সময় সচেতন। মিঠু আমাদের পূর্বনির্ধারিত সময়েই এসেছেন।
কী দিয়ে আলাপ শুরু হয়?
নাম ও কে কোথায় থাকি এইসব। যেমন, আমি থাকি সাউথএন্ড অন সি। উনি থাকেন ইংল্যান্ডের বাগান খ্যাত কেন্টে।
কোন বিষয়গুলো নিয়ে কথা বললেন আপনারা?
সামাজিক ও পারিবারিক বিষয়ে আমরা কথা বললাম। ইংল্যান্ডের জীবন-যাপন, এখানকার জীবনসংগ্রাম নিয়ে কথা হয়। বাংলাদেশ থেকে এদেশে এসে গুছিয়ে বসার যে জার্নি তা নিয়ে লম্বা আলাপ করি আমরা।
আলাপকালে মতের মিল বা অমিল কেমন ছিল?
মতের মিল ছিল। অমিলের মত কোনো আলোচনা ওঠেনি।
কোন দিকগুলো ভালো লেগেছে?
মিঠুর গুছিয়ে কথা বলা এবং সামাজিক দায়িত্ববোধ। উনি অনেক ব্যস্ত জীবন যাপন করেন। কিন্তু সামাজিক দায়িত্ববোধ নিয়ে বেশ সচেতন। উনি ওনার গ্রাম ও আশেপাশের গ্রামের প্রাইমারি স্কুলগুলোতে পাঠাগার তৈরি করে দেওয়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। প্রতি মাসে একটি স্কুলে নির্দিষ্ট সংখ্যক বই দেন মিঠু। এটা একেবারেই ব্যক্তিগত উদ্যোগ। সামাজিক সচেতনতার উচ্চ পর্যায়ে না থাকলে এমনটা করা যায় না। মিঠুর এই কাজটা অনেক বড়। কেননা কোমলমতি শিশুদের যদি সঠিক পথে চালিত করা যায় তাদের হাত ধরেই একটি সুন্দর দেশ তৈরি হবে।
সাইফ মিঠুর কোনো কিছুতে কি বিব্রত হয়েছিলেন আপনি?
না। তেমন কিছু আমার মনে হয়নি।
পরিবার বা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে কী আলাপ হয়েছে?
সাধারণ আলাপগুলোই হয়েছে। কে কে আছেন পরিবারে তারা কী করেন এসব। মিঠু তার পরিবারকে অনেক সময় দেন। আর পরিবারের কাজগুলো গুছিয়ে করতে ভালোবাসেন।
আপনার বন্ধুদের সাথে ওনাকে কি আলাপ করাবেন?
হ্যাঁ। কোনো অসুবিধা দেখছি না।
আশাবাদ নাকি উল্টোটা বেশি দেখলেন?
মিঠু আশাবাদী মানুষ।
মোবাইল নম্বর কি বিনিময় হয়েছে?
হ্যাঁ। হয়েছে।
ফেসবুকে পরস্পর যুক্ত হয়েছেন কি?
না, আমরা এখনো ফেসবুকে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হইনি।
আপনাদের আবার দেখা হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি?
হতে পারে। চারপাশে পজিটিভ চিন্তার মানুষের বড্ড অভাব। আমাদের আবার দেখা হলে বা কথা হলে ভালো লাগবে।
সাইফ মিঠুকে তিনটি শব্দে বর্ণনা করুন।
সামাজিক সচেতন, সংসারী ও সাহিত্যপ্রেমী।
আলাপটিকে ১০ নম্বরের মধ্যে আপনি কত দেবেন?
৯/১০
চাইলে আরো কিছু বলুন—
আমাদের কথোপকথন আনন্দের ছিল, যদিও সময় স্বল্পতার জন্য বেশিক্ষণ বসতে পারিনি আমরা।
কস্তার পরিবেশটা ভালো ছিল। কফির গন্ধে মাতোয়ারা ছিল চারপাশ।
মনিকাকে মনোযোগী শ্রোতা মনে হয়েছে মিঠুর
প্রথমে মনিকা সাহাকে দেখে আপনার কী মনে হয়েছিল?
জীবনজয়ীর মাধ্যমে আমার কাছে তাঁর নাম্বার ছিল। ইলফোর্ড স্টেশনে এসে ফোন দিলে উনি আমাকে নিয়ে যাবেন, তারপর কোথাও বসা হবে এমনটাই কথা ছিল। ফোন করার পর আমাকে স্টেশনের পাশের কস্তা কফি শপে যেতে বললেন। উনি দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলেন।
কী দিয়ে আলাপ শুরু হয়?
আমরা যারা প্রবাসে থাকি আমাদের আলাপ শুরু হয়, বাংলাদেশে কোথায় বাড়ি এটা দিয়ে। আমরাও শুরু করেছি এভাবেই।
কোন বিষয়গুলো নিয়ে কথা বললেন আপনারা?
আমাদের আলাপের বড় অংশ জুড়ে ছিলো চাকরি, ডেইলি লাইফ, পরিবার, সন্তান। জব নিয়েই কথা হয়েছে বেশি। আমরা কাছাকাছি সময়েই বাংলাদেশ থেকে এসেছি। উনি আমার দুবছর আগে এসেছিলেন। প্রথম দিককার লন্ডনের সময়গুলো নিয়ে কথা হয়েছে অনেক।
আলাপকালে মতের মিল বা অমিল কেমন ছিল?
মতের অমিল ছিল না—আমরা পজিটিভ আলাপই করেছি।
কোন দিকগুলো ভালো লেগেছে?
মনিকা একজন প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট্যান্ট। ওনাদের নিজস্ব অ্যাকাউন্টিং ফার্ম। কফি শপ থেকে বের হয়ে উনার অফিসও দেখে আসলাম। পরিবার এবং প্রফেশনাল কাজকর্ম ঠিকঠাকভাবে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন—এ বিষয়টি ভালো লেগেছে।
মনিকা সাহার কোনো কিছুতে কি বিব্রত হয়েছিলেন আপনি?
বিব্রত হওয়ার মতো কোনো কিছু ঘটেনি।
পরিবার বা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে কী আলাপ হয়েছে?
মূলত পরিবার নিয়েই কথা হয়েছে বেশি। সন্তান, তাদের লেখাপড়া, কাজের পাশাপাশি কীভাবে সময় বের করা হয় পরিবারের জন্য, হলিডে এগুলোই ছিল মূল আলোচ্য। বন্ধুবান্ধব নিয়ে খুব একটা কথা হয়নি।
আপনার বন্ধুদের সাথে ওনাকে কি আলাপ করাবেন?
আলাপ করাতে আপত্তি নেই। দরকার হলে অবশ্যই করাব।
আশাবাদ নাকি উল্টোটা বেশি দেখলেন?
আশাবাদী বলা যায়। তবে হতাশা ছিল বাংলাদেশ নিয়ে।
মোবাইল নম্বর কি বিনিময় হয়েছে?
হয়েছে।
ফেসবুকে পরস্পর যুক্ত হয়েছেন কি?
না, আলাপের সময় হয়নি।
আপনাদের আবার দেখা হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি?
আছে। ওনার অফিসের কাছেই আমার কাজিনের বাসা। আমাদের প্রায়ই ওখানে যাওয়া হয়। ওদিকটায় আসলে ওনার অফিসে অবশ্যই ঢুঁ মারব। আর উনি যেহেতু অ্যাকাউন্ট্যান্ট—প্রফেশনাল হেল্প লাগতে পারে।
মনিকা সাহাকে তিনটি শব্দে বর্ণনা করুন।
শান্তশিষ্ট মনোযোগী শ্রোতা। গুছিয়ে প্রমিত বাংলায় কথা বলতে পারেন।
আলাপটিকে ১০ নম্বরের মধ্যে আপনি কত দেবেন?
১০ নম্বরের মধ্যে সাত দেওয়া যায়। আমাদের মধ্যে মনে হয় কিছুটা আড়ষ্টতা ছিল। আর হাতে কাজ থাকায় আলাপ শেষ করার তাড়া ছিল। ক্যাফেটাতে ভিড় ছিল খুব।
চাইলে আরো কিছু বলুন—
তেমন কিছু না। মজার ব্যাপার হলো কফি শপে এখন চাও পাওয়া যায়। আমি মিন্ট টি নিয়েছিলাম।
রান্না যেন থেরাপি
রাঁধবি তুই! কিন্তু ফেসবুকে ফটো দিয়ে আমরা ক্রেডিট নেব
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে যা পেয়েছি তা কোনোদিন ভুলব না
কীভাবে একটি ছোট্ট গ্রাম ভারতের একটি ইউটিউব রাজধানী হয়ে উঠেছে?
মানবিক রোবট : এক নতুন যুগের সূচনা
জীবন থেমে থাকে না, বরং অন্যভাবে গল্প শুরু হয়
মনে হচ্ছিল আমার কোনো অঙ্গহানি হয়ে গিয়েছে
বাবা-মায়ের সঙ্গে অনেকক্ষন কথা বললাম
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ ফ্রেশ লাগছিল
দিনটায় আমি নিজেকে সময় দিতে পেরেছি
আপনি কোন সাহিত্যিকের কবিতা বা রচনা রোমান্টিক আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত মনে করেন?